বিবিএন নিউজ: আফগানিস্তানের কাবুল দখলের আগেই গত জুলাইয়ে তালেবান বিভিন্ন অফিসে গিয়ে নারীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। তাদের কাজে ফিরতেও নিষেধ করে তারা। তবে তালেবান ঠিক কত নারীর সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করেছে তা জানা যায়নি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান কান্দাহার রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরে সেখানকার আজিজি ব্যাংকের এক শাখায় গিয়ে সব নারীকে অফিস ছাড়ার নির্দেশ দেয়। বন্দুকধারীদের কড়া পাহারায় নারীদের বাড়িতে দিয়ে আসা হয়। তাদের বলা হয়, তারা যেন আর কাজে না আসেন, তবে তাদের বদলে চাইলে পরিবারের কোনো পুরুষ সদস্য তাদের চাকরি নিতে পারবেন। জানা গেছে, আজিজি ব্যাংকের সেই শাখায় ৯ জন নারী কর্মী ছিলেন। তেমনই একজন নুর খাতেরা। তিনি ব্যাংকটিতে হিসাবরক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি ইংরেজি এবং কম্পিউটার চালানো শিখেছিলাম, কিন্তু এখন আমাকে শুধু নারীরা আছেন, এমন জায়গার কাজ করার কথা বলা হয়েছে।’ এদিকে, আফগানিস্তান উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আফগান নারীরা ধীরে হলেও অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। ২০২০ সালে দেশটির ৩৪টি প্রদেশে অন্তত ১ হাজার ৫০০ নারী মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ছিল। যেসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অন্তত ৭০ হাজার নারী ও পুরুষের কর্মসংস্থান হয়। এ ছাড়া অপ্রাতিষ্ঠানিক ব্যবসায় নারী মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ছিল অন্তত ২০ হাজার। যেখানে ২০০৩ সালে দেশটির মাত্র ১০ শতাংশ মেয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যেত, সেখানে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই সংখ্যা ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত ওঠে। সব মিলিয়ে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশটির ৩৫ লাখ মেয়ে স্কুলে এবং ১ লাখ নারী বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পেরেছিলেন। কাবুল তালেবানের দখলে যাওয়ার পর আফগান সরকার ইতিমধ্যে স্বেচ্ছায় পিছিয়ে গেছে। ফলে ধরে নেওয়া যায়, আফগানিস্তানের সরকার ব্যবস্থার মতো নারীনীতিও এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে তালেবানের ওপর। তবে আফগানিস্তানের বড় টেলিভিশন চ্যানেল তোলোনিউজের পর্দায় উপস্থাপনায় ফিরে এসেছেন নারীরা। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।